স্বদেশ ডেস্ক:
রোজগারের সবটুকু দিয়ে ২০১২ সালে রাজধানীর মিরপুর-২ নম্বর বড়বাগ এলাকায় ৬৯ নম্বর ভবনের ৫/বি ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন সাহিদা আমির পলিন দম্পতি। ফ্ল্যাটের দাম নির্ধারণ করা হয় ৬৫ লাখ টাকা। কিন্তু ভবন মালিক এম এ রহিম পুরো টাকা বুঝে পাওয়ার দেড় বছরেও ১ হাজার ৪৫০ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাটটি তাদের বুঝিয়ে দেননি। উপরন্তু, সংস্কারের কথা বলে ওই দম্পতির কাছ থেকে চেকের বিনিময়ে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন ৭৯ লাখ টাকা। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় কাছে এসব অভিযোগ করেন সাহিদা আমির।
তিনি জানান, ২০১৪ সালের শেষভাগে ফ্ল্যাটের কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই সেটি তাদের বুঝিয়ে দেন এম এ রহিম। অগত্যা, বসবাসের উপযোগী করতে আরও ১০ লাখ টাকা খরচ করতে হয় সাহিদা আমিরকে। কিন্তু বিপত্তি পিছু ছাড়েনি। পাওনা টাকা ফেরত চাইলে তাদের ওপর নির্যাতনের নতুন খড়গ নেমে আসে। কেটে দেওয়া হয় সাহিদার ফ্লাটের বিদ্যুৎ-গ্যাসের লাইন। উঠতে দেওয়া হয় না ছাদে। ভবনের নিচ তলায় প্রতিদিনই বসানো হয় মাদকের আখড়া।
এখানেই শেষ নয়, এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই পেটোয়া বাহিনী দিয়ে হুমকি-নির্যাতন এমনকি থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েও এই প্রতিবেশীকে শায়েস্তা করেন এম এ রহিম। সর্বশেষ ছাদে ওঠা নিয়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বৃহষ্পতিবার রহিমের পেটোয়া বাহিনীর হামলার শিকার হতে হয় সাহিদা আমিরের ছেলে ইফতিয়াক হোসেনকে। এ বিষয়ে সে দিনই মিরপুর মডেল থানায় ভবন মালিক এম এ রহিম ও তার তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- মো. সুমন, মো. জুয়েল ও মো. মনির। কিন্তু জিডি করেও থামেনি হুমকি-ধমকি। গতকালও ভুক্তভোগী ইফতিয়াকের ওপর হামলা চালাতে ভবনের নিচে মহড়া দিয়েছে ওই পেটোয়া বাহিনী। সব মিলিয়ে ভয়ঙ্কর ওই প্রতিবেশীর কবলে পড়ে অসহায় হয়ে পড়েছে পরিবারটি।
শুধু এই পরিবারই নয়, ওই ভবনের আরও কয়েক ফ্ল্যাটের মালিকও এম এ রহিমের কবলে পড়ে এখন দিশেহারা। তাদের মধ্যে একাধিক ফ্ল্যাট মালিক বাধ্য হয়ে অন্যত্র ভাড়া থাকছেন। ঝামেলা এড়াতে সাহিদা আমির দম্পতিও নিজের কেনা ফ্লাট ছেড়ে গত চার বছর ধরে মিরপুর ছেড়ে ভাড়া থাকছেন পল্লবী এলাকায়। অভিযোগের বিষয়ে জানতে শুক্রবার রাতে ভবন মালিক এম এ রহিমের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করলেও তিনি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুস্তাফিজ বলেন, ‘ছাদে ওঠা নিয়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এই বিষয়ে উভয় পক্ষই জিডি করেছেন। তদন্ত চলছে। তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।’